স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও কর্মসংস্থান তৈরির সুপারিশ সিপিডি'র
- সারাবাংলা - জাতীয়
- ১০ মে ২০২০ - ৫ বছর আগে
- পড়া হয়েছে - ৩৫৮৫৯
ঢাকা, ৯ মে ২০২০, শনিবার: বর্তমান করোনা মহামারির দুর্যোগকে সামনে রেখে আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্য সুরক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থান তৈরিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্ব দেয়ার সুপারিশ করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। আজ এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ সুপারিশ পেশ করে সিপিডি।
‘কোভিড-১৯ বর্তমান প্রেক্ষাপট ও বাজেট ২০২০-২১’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটি আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট নিয়ে সুপারিশমালা এবং কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সরকার গৃহীত বিভিন্ন নীতিগত সিদ্ধান্ত সম্পর্কে মতামত ও পর্যবেক্ষণ উপস্থাপন করে। অত্র সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।
সিপিডি জানায়, "মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) এক শতাংশের কম বরাদ্দ নিয়ে চলমান সংকটের মধ্যে দেশের নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা অত্যন্ত কষ্টকর। দেশের স্বাস্থ্য খাতের বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করার এখনই সময়। এক্ষেত্রে,বাজেট বরাদ্দ,দক্ষতা ও জনবল বৃদ্ধি এবং বাজেট বাস্তবায়নে আরো স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।"
তিনি বলেন, "চলমান মহামারির ফলে ২০২০-২১ অর্থবছরে জাতীয় অর্থনীতি বিভিন্নমূখী ঝুঁকির মধ্যে থাকবে। বাস্তবসম্মত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের মাধ্যমে এ সকল ঝুঁকি মোকাবেলায় একটি সম্প্রসারণমূলক বাজেট প্রণয়ন করা জরুরি। বিভিন্ন সরকারি ব্যয় ও বরাদ্দের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন করা উচিত।"
তিনি আরো প্রস্তাব দেন যে, "২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে কালো টাকা সাদা করার কোনো সুযোগ দেওয়া ঠিক হবে না। মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ওপর চাপ কমাতে করমুক্ত... আয়সীমা ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করতে হবে।"
সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন সরকারকে মিতব্যায়ী হয়ে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় সংকোচনের মাধ্যমে অর্থের সংস্থান করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, "প্রশাসনিক ও অন্যান্য অনুৎপাদনশীল খাতে সরকারের ৫০ শতাংশ ব্যয় কমানোর সুযোগ রয়েছে।"
তিনি আরো বলেন যে, "বিভিন্ন দাপ্তরিক কার্যক্রম ও সরকারি পরিবহন ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরো স্বচ্ছতা আনয়নের মাধ্যমে সরকার সাশ্রয়ী ও ব্যয় সংকোচনমূলক নীতি গ্রহণ করতে পারে।" সরকার ঘোষিত প্রনোদনা কাঠামো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ব্যাংকি খাতের ভূমিকা প্রসঙ্গে ড. ফাহমিদা অত্যন্ত সতর্কভাবে দায়িত্ব পালনের উপর জোর দেন।
চলমান মহামারির ফলে, দেশের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ, যারা দৈনিক ও চুক্তিভিত্তিক মজুরির ওপর নির্ভরশীল তারা এক বড় ধরণের অর্থনৈতিক শঙ্কার মধ্যে পড়েছেন। এরকম পরিস্থিতি মোকাবেলায় সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও অপ্রত্যক্ষ করের ওপর বেশি চাপ না দেওয়ার পরামর্শ দেন।
তদ্বসংগে প্রবাসী কর্মীবাহিনীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ দেশে ফিরে এসেছেন এবং অনেকে কর্মহীন অবস্থায় রয়েছেন। এমতাবস্থায় প্রবাসী কর্মীসহ দেশের কর্মহীন জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারের একটি অর্থিক সহযোগিতা কাঠামো বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন বলে মনে করে সিপিডি।
এছাড়া ২০১৩ সালের পর থেকে দেশে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। ড. মোস্তাফিজ এ সকল খাতে ধারাবাহিকভাবে নিয়োগের মাধ্যমে স্বাস্থ্য জনবল কাঠামো শক্তিশালী ও দক্ষ করার সুযোগ রয়েছে বলেও মনে করেন।
মন্তব্য